Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Widget

শঙ্খচূর্ণিকা ঠাকরুন | নবনীতা দেব সেন

এক গ্রামে এক কাঠুরে ছিল; তার দুই মেয়ে, পিকপিক আর টুমটুম৷ পিকপিক বড়ো, সে শান্ত, শিষ্ট, বুদ্ধিমতী৷

টুমটুম ছোটো, সে একটু দুষ্টু আছে, একটু বোকা আছে৷ ভদ্রতা সভ্যতা এখনও বেশি শেখেনি৷ লোকের সামনে খালি পায়ে চলে আসে, নাক-টাক খুঁটে ফেলে, টাক দেখলে হেসে ফেলে, টিকি দেখলেই টেনে ফেলে৷ কিন্তু টুমটুম খুব সাহসী৷

সে তো বই পড়তে শেখেনি, ভূতের গপ্পো-টপ্পো পড়েনি, ভূত যে আছে, তা-ই সে জানে না; পিকপিক কিন্তু জানে৷ সে খুঁটিয়ে জানে শাঁকচুন্নি কেমন হয়, মেছোপেতনি কী চায়, বেম্মদত্যি কেমন দেখতে, মামদোর স্বভাব কেমনধারা৷ পিকপিক তাই অন্ধকারে বেরোতে চায় না৷ একলা ঘরে থাকতে চায় না৷ কিন্তু ছোটো বোনটি পাছে ভয় পায়, তাই ভূত-পেতনির কথা কিছু বলেও না; কিন্তু ঠিক সামলে-সুমলে রাখে৷ ঠিক দুকখুর বেলা ভূতে মারে ঢেলা, তাই তখন সে টুমটুমকে মাঠে যেতে দেয় না, গাব গাছের কাছে তো নয়ই৷ সন্ধ্যে হলেই আশশ্যাওড়ার পাশ দিয়ে হাঁটা বারণ৷ অমাবস্যের রাতে বেল গাছের ধারকাছ দিয়ে যেতে দেয় না বোনটিকে; কিন্তু টুমটুম তো বোঝে না কেন বারণ করে! তাই সে মাঝে মাঝে ভুলে ভুলে চলে যায়৷

একদিন কাঠুরে গেছে বনে কাঠ কাটতে, পিকপিক মায়ের সঙ্গে ঘরের কাজকম্মো করছে, টুমটুম দেখে গাবগাছের ডগাতে একটা লাল টুকটুকে চৌখুপি ঘুড়ি আটকে আছে৷ অমনি টুমটুম গাছে চড়তে গেল৷ গাছে পা দিয়েই শোনে, একটা গলা এ্যাঁই তুঁই আঁমার গাঁছে চঁড়ছিসঁ কেঁন?-টুমটুম এতই বোকা, সে জানেও না যে ভূত-পেতনিরা নাকি সুরে কথা কয়৷ সে বললে-তুমি কে গা? তোমার গলায় কী হয়েছে? তোমার গলা ওরকম শোনাচ্ছে কেন? শুনে শাঁকচুন্নি তো অবাক৷ আচ্ছা মেয়ে তো? শাঁকচুন্নি চেনে না? সে বললে আঁমি শ্রীঁ শ্রীঁ শঁঙ্খচূর্ণিকা দেঁবী৷ টুমটুম ভাবলে এ আবার কোন দেবীরে বাবা? তেত্রিশ কোটির মধ্যে একজন হবেন! বুদ্ধি করে বললে-পেন্নাম হই ঠাকরুন৷ আমি টুমটুম৷ ওই ঘুড়িটা ধরতে এসেছি৷ তোমার গলায় কী হয়েছে? টনসিল? একটু গার্গল করবে? শাঁকচুন্নি প্রণাম পেয়ে খুব খুশি৷ আরও খুশি গার্গল করার কথা শুনে৷ তার আবার প্রাণে গানবাজনার খুব শখ৷ আর তার ভূতজীবনের আদর্শ হচ্ছে লতা মঙ্গেশকরের মতো গান গাওয়া৷ ওই নাকি সুরের জন্যই যত গণ্ডগোল হয়ে যায়৷ শাঁকচুন্নি ভাবলে এই সুযোগে যদি নাকি গলাটা সারিয়ে নিয়ে লতার মতন করে ফেলা যায় তা ছাড়ি কেন? সে বলল-গাঁর্গলটা কী জিঁনিস? ব্যাপার দেখে টুমটুমের তো গালে হাত! অবাক হয়ে সে বললে-তুমি কোথাকার লোক? গার্গল জানো না? মুখে নুন-গরম জলের আঁজলা নিয়ে গলায় গড়গড় শব্দ করতে হয়৷ তাহলেই গলা সেরে যায়৷ তা তুমি কোথথেকে কথা কইচো? তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না তো? শাঁকচুন্নি বললে-দেঁখেঁ কী হঁবে? কঁথা তোঁ শুঁনতে পাঁচ্ছঁ?

শাঁকচুন্নিকে দেখতে যে ভালো নয়, সে নিজেও তা জানে৷ তার টুমটুমের পুতুলের মতন চেহারার সামনে বেরোতে লজ্জা করল৷ ভয় দেখানোর জন্যেই যে চেহারাটা তৈরি, তাই নিয়ে ভাব করা যায় কি? শাঁকচুন্নি তো বুঝে ফেলেছে যে টুমটুম ভয় পাবে না, বরং তাকে দেখলে কৌতূহলী হবে৷ হয়তো বলবে ও কী ভাই তোমার দাঁতগুলো অত বড়ো বড়ো কেন, অত হলদে কেন? মাজো না বুঝি?

কিংবা বলবে ও কী! তোমার হাত-পাগুলো অমন কাঠি কাঠি হয়ে গেল কী জন্যে? অসুখ করেছিল?

অথবা বলবে, আরে! আরে! ও কেমন পা তোমার? গোড়ালিদুটো সামনের দিকে কেন? অত বড়ো বড়ো চুল কেন রেখেছ? অত লম্বা লম্বা নোখ কেন বাড়িয়েছ? কাটতে পারনি৷ আনো দেখি কাঁচি৷ সাত-পাঁচ এইসব ভেবে ভেবে শাঁকচুন্নির মনে বুদ্ধি এল৷ বললে-দেঁবতাঁদের কিঁ অঁমন চঁট কঁরে দেঁখতে পাঁওয়া যাঁয়?

বোকা হলেও টুমটুমের বুদ্ধি আছে৷ সে বললে-তুমি যদি দেবতা হও তাহলে আমাকে একটা বর দাও তো দেখি?

শাঁকচুন্নি বললে- কীঁ বঁর?

টুমটুম বললে-ওই লাল ঘুড়িটা পেড়ে দাও তো৷-এঁ-ইঁ, বলে শাঁকচুন্নি টুক করে ঘুড়িটা ফেলে দিলে ওপর থেকে৷

টুমটুম তো অবাক! আরে৷ এ যে সত্যিই দেবী৷ টুমটুম বললে, আরও বর

দিতে পার নাকি তুমি? তাহলে দাও দিকিনি আমার বাবার জন্যে একটা ঠেলাগাড়ি বানিয়ে? মাথায় করে বয়ে কাঠ আনতে আমার বাবার খুব কষ্ট হয়৷

শাঁকচুন্নি বললে, এঁ আঁর এঁমন কী? বলেই হাত বাড়িয়ে পাশের গাঁ থেকে একটা ঠেলাগাড়ি এনে দিলে৷ টুমটুম তার হাতখানা দেখতে পেলে না৷ শুধু চক্ষের নিমেষে দেখলে তার পাশে এক ঠেলাগাড়ি৷ ভূতেরা ইচ্ছে মতন অদৃশ্য থাকতে পারে৷ টুমটুম ইচ্ছে করলেও পাঁচ মিনিটের জন্যেও অদৃশ্য হতে পারে না৷ না পেরে তার অসুবিধা হয় প্রায়ই৷ অদৃশ্য হয়ে যদি রন্টুদের পেয়ারা গাছে চড়া যেত, অদৃশ্য হয়ে যদি মার আচারের বয়াম পাড়া যেত, ইস্কুলে পণ্ডিতমশাই পড়া ধরবার সময়ে যদি অদৃশ্য হয়ে যাওয়া যেত, ইত্যাদি নানা দরকার থাকে টুমটুমের৷ কিন্তু সে তো দেবতা নয়৷ সে ভাবলে, দেবতাদের কী মজা! যেমন খুশি দেখা দেন, বাকি সময়টা অদৃশ্য থাকতে পারেন৷ টুমটুমেরও ঠিক তাই হলে ভালো লাগত৷ যাকগে বেঁচে থেকে তো কেউই দেবতা হতে পারে না, টুমটুম তাই বেশিক্ষণ মন খারাপ করলে না ওই নিয়ে৷ হাতে ঘুড়ি৷ পাশেই বাবার নতুন ঠেলাগাড়ি৷ টুমটুমের মেজাজ প্রসন্ন হয়ে উঠল৷ সে বললে-তা ছংকচুন্নিকা ঠাকুর৷ তুমি একটু প্রসাদ খাবে? টুমটুম তো ছেলেমানুষ৷ জানে না যে ঠাকুররা ‘নৈবেদ্য’ খান, আর মানুষ ঠাকুরদের এঁটো কলাবাতাসাটা ‘প্রসাদ’ বলে খায়৷ ঠাকুর আবার ‘প্রসাদ’ খাবে কী? কিন্তু ও দেখেছে প্রসাদের জন্যে ওর মা কলা কাটেন, বাতাসা কিনে রাখেন৷ টুমটুম একছুটে বাড়ি গিয়ে দুটো বড়ো বড়ো বাতাসা নিয়ে এল শাঁকচুন্নির জন্যে৷ এই নাও৷ প্রসাদ খাও৷

শাঁকচুন্নি বেচারি পাতকুড়োনো নোংরা খায়, শ্মশানে-মশানে মরা জিনিস খায়, আঁস্তাকুড় থেকে ছাইপাঁশ খায়, সে তো কখনো বাতাসা খেতে পায়নি৷ তার এত ভালো লাগল বাতাসা মুখে দিয়ে, মনে হল যেন অমৃত! সে তক্ষুনি টুমটুমকে আরেকটু ভালোবেসে ফেললে৷ টুমটুম ততক্ষণে বাড়ি গিয়ে গেলাসে করে তার জন্যে নুন-গরমজল নিয়ে এসেছে৷ যেমন টুমটুমের হাত থেকে বাতাসা দুটো হঠাৎ ম্যাজিকের মতো উবে গিয়েছিল, তেমনি গেলাসটাও টুক করে অদৃশ্য হয়ে গেল৷ টুমটুম বললে, এ জলটা যেন খেয়ো না, গার্গল করতে দিয়েছি৷ তোমার নাকি গলাটা আমার বিচ্ছিরি লাগছে৷

শাঁকচুন্নি বললে৷ বাঁ:৷ এঁই বুঁঝি গাঁর্গল? বলেই তিনতুড়ি দিয়ে গেয়ে উঠল-হঁম তুমসে প্যার কঁর লুংগি, বাঁতেঁ হজাঁর কঁর লুংগি৷

টুমটুম বললে, ও কী গো? ও যে খুব পুরোনো গান? নতুন কিছু জান না?

শাঁকচুন্নি তখন গাইলে, তোঁমাঁর হঁলঁ শুঁরু আঁমাঁর হঁলঁ সারাঁ৷-এ গানটা বেশ ভালোই লাগল টুমটুমের৷ সে ভাবলে-আশ্চর্য৷ ঠাকুররাও গান করেন তা তো জানতাম না৷ ভাবতাম তারা বুঝি কেবল স্তোত্র পড়েন, আর নমস্তস্য, নমস্তুতে এইসব করেন৷ সে বললে, ঠাকুর তুমি গার্গলটা করে নাও৷ জল জুড়িয়ে যাবে৷ বলে ঘুড়ি নিয়ে খেলতে চলে গেল৷

এদিকে শাঁকচুন্নি তো প্রাণপণে গার্গল করছে৷ সে লতা হবেই৷ সবটা নুন জল ফুরিয়ে যেতে গেলাসটি হাত বাড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবিয়ে নিয়েছে নুনজলের জন্যে৷ শ্মশান থেকে চিতার আগুনে সেঁকে জলটা গরমও করে নিয়েছে৷ আরও গার্গল করছে৷ কিছুতেই নাকি ভাবটি কাটছে না৷ একটুর জন্যে ঠিক লতাটাইপ আওয়াজটা বেরিয়েও বেরোচ্ছে না৷

পিকপিক এমন সময়ে বোনকে খুঁজতে এদিকে আসছিল৷ হঠাৎ শুনলে গাবগাছ থেকে গঁড় গঁড়-গঁড় গঁড় শব্দ, তারপরেই ঝপাস করে গরম গরম কী যেন তার মাথায় পড়ল৷ আর যাবে কোথায় বাবাগো-মাগো বলে যেই সে পালাতে যাবে অমনি গাছের শেকড়ে পা জড়িয়ে ধপাস৷ টুমটুম ছুটে এসে দিদিকে তুললে, দিদির মাথা ভিজে ভিজে৷ ব্যাপার শুনে বললে-ও কিছু না৷ ও তুই মাথাটা পুকুরে ধুয়ে ফেল৷ ছংকচুন্নিকা দেবী গার্গল করছেন৷ শুনে তো পিকপিক আবার পড়ে যাবার জো-সে কী! টুমটুম বললে-হ্যাঁ৷ ঠাকুরুনের গলাটা ধরেছে কিনা, গান গাইতে পারছেন না৷ আমি তাই নুন জল দিয়েছি৷ পিকপিক ভয় পেলেও বুদ্ধি হারায় না৷ সে ঠান্ডা মাথায় বোঝবার চেষ্টা করলে, কী হচ্ছে৷ টুমটুম ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতেই পুরো গল্পটা বললে৷ ঘুড়ির প্রমাণ তার হাতেই৷ আর বাবার জন্যে ঠেলা গাড়িখানা গাবগাছে হেলানো রয়েছে৷ দেখেশুনে পিকপিক ক্রমে ধাতস্থ হল৷ সে বুঝল শাঁকচুন্নিটা লোক ভালোই, মিশুক আছে৷ কিন্তু ছোটো ছেলেমেয়েদের যার-তার সঙ্গে মেশা তো উচিত নয়৷ হলেই বা ভালো লোক, ভূত তো সে! কখন মেজাজ খারাপ থাকবে, ঘাড়-টাড় মটকে ফেলবে, তার ঠিক কী? পিকপিক একমনে ভাবতে লাগল, কী করা? কী করলে ভূত রাগ করবে না, ভূতের ক্ষতি হবে না, আবার এই মেলামেশাও বন্ধ হবে৷ তারপর বললে, আচ্ছা টুমটুম, শঙ্খচূর্ণিকা ঠাকরুন কি বিশ্বসংগীত সম্রাজ্ঞী প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে চান?

গাছের ওপর থেকে জবাব এল, সেঁটা কোঁথাঁয় হঁবেঁ ভাঁই?

পিকপিক এই প্রথম স্বকর্ণে ভূতের ভাষা শুনলে৷ কিন্তু অবাক হয়ে ভাবলে, কই, ভয় তো করছে না! বরং সে বুঝলে, ওষুধ ধরেছে৷ শাঁকচুন্নি মজেছে৷ বললে-স্কটল্যান্ডে হচ্ছে৷ এডিনবরা শহরে৷

শাঁকচুন্নি বললে, কঁবে হঁবে?

পিকপিক কালবিলম্ব করলে না৷ বললে, আজই৷ অমনি শোঁও-ও করে একটা আওয়াজ হল, গাবগাছের একটা সরু ডাল ভেঙে পড়ল, শঙ্খচূর্ণিকা দেবী টেক-অফ করলেন৷-এক লম্ফ দিয়ে ডাঙা পার হয়ে, আরবসাগর, লোহিতসাগর, ভূমধ্যসাগর, বে-এব-বিস্কে পেরিয়ে, নর্ফ-সির তীরে, স্কটল্যান্ডে গিয়ে টাচ-ডাউন৷ ভূতেদের অনেক নিয়ম আছে৷ ওরা মানুষদের চেয়েও ওলড ফ্যাশানের তো! তিনটে সমুদ্র যদি কেউ একলাফে ডিঙোয় তাহলে তার আর ভারতীয় ভূতসমাজে ঠাঁই হয় না৷ শাঁকচুন্নি এডিনবরায় পৌঁছে দেখে, তাই তো! সত্যি সত্যি সেখানে বিখ্যাত ‘এডিনবরা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’ হচ্ছে৷ গানবাজনা শুনে মুগ্ধ হয়ে শাঁকচুন্নি দেশের কথা ভুলেই গেল৷ লতা না হয়ে সে এখন জোন বায়েজ হবার সাধনা করছে৷

পিকপিক টুমটুমকে সাবধান করতে বলে দিয়েছে, দেখ, অচেনা লোকের সঙ্গে কথা কইতে নেই সে দেব, দানব, মনিষ্যি যেই হোক৷ শঙ্খচূর্ণিকা দেবী যে আসলে শাঁকচুন্নি ভূত ছিলেন, তা কিন্তু টুমটুম এখনও জানে না৷ আর আশ্চর্য ব্যাপার, পিকপিকের একবার ভূতের সঙ্গে আলাপ পরিচয় হয়ে গিয়ে সেই ভয়-ভাবটাও যেন কেটে গেছে৷ এখন সে গাবগাছের নীচে যেতে তো ভয় পায়ই না, আশশ্যাওড়া ঝোপের পাশেও যায়৷ কিন্তু শাঁকচুন্নির এঁটো গেলাসটা সে কিছুতেই রান্নাঘরে তুলতে দেয়নি৷ তাতে মাটি ভরে একটা মানিপ্লান্ট লাগিয়েছে বারান্দায়৷ কাঠুরে তো বাড়ি ফিরে গাড়ি দেখে অবাক৷ তারপর সাতদিনেও যখন কেউ সেই ঠেলাগাড়ি নিতে এল না, তখন সেই গাড়ি করেই কাঠুরে বন থেকে কাঠ আনতে লাগল, হাটে কাঠ নিয়ে যেতে শুরু করল৷ আর মনে মনে শাঁকচুন্নিকে থ্যাংকিউ বলল৷ টুমটুমের কিন্তু অতশত বুদ্ধি নেই৷ গাছের উঁচু ডালে ঘুড়ি আটকে থাকতে দেখলেই তার মনে হয়, আহা গো শঙ্খচূর্ণিকা ঠাকরুন যদি স্কটল্যান্ডে চলে না যেতেন৷

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ